রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:-“বাংলাদেশ আমার অহংকারচ্ এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে।
র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজু ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজুর নিকট আত্বীয় মোঃ জামাল উদ্দিন ও তার দুই ছেলে আরাফাত ও তারেক পেশায় গরু ব্যবসায়ী ছিলেন। মোঃ জামাল উদ্দিন জনৈক এরশাদের নিকট দুইটি গরুর বাছুর বর্গা দিয়েছিল। গত ০৯ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ১০০০ ঘটিকার দিকে এরশাদের সংগে শাহীন হোসেনের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে শাহীন ও তার দল মিলে নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজুর নিকট আত্বীয় মোঃ জামাল উদ্দিনের এরশাদের নিকট বর্গা দেওয়া গরুর বাছুর ০২টি জোরপূর্বক নিয়ে যেতে চেষ্ঠা করে। তখন গরুর আসল মালিক মোঃ জামাল উদ্দিন ও তার দুই ছেলে আরাফাত ও তারেক বাছুর ০২টি না নেওয়ার জন্য বাধা প্রদান করে। সে সময় শাহীন ও তার দল মোঃ জামাল উদ্দিন ও তার দুই ছেলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে অনেক মারধর করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
উক্ত বিষয়টি মোঃ জামাল উদ্দিনের ছেলে আরাফাত নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজুকে অবগত করে এবং ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। আরাফাতের কথা মত নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজু তৎক্ষনাত তার দুই বন্ধুকে সংঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং শাহীন হোসেনথকে মারধরের কথা জিজ্ঞাসা করলে সাথে সাথে শাহীন ও তার অপর সঙ্গীরা মিলে তাদের হাতে থাকা রাম দা, কিরিচ, ধাড়ালো ছুরি, লোহার রড দিয়ে ইব্রাহিম রাজু শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারী কোপ/আঘাত করতে থাকে। এরুপ উপুর্যোপরী আঘাতের ফলে ইব্রাহিম রাজু গুরুতর জখম ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পরে যায়। তখন শাহীন ও তার অপরাপর সঙ্গীদের হাতে থাকা
দেশীয় ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে রাজুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে ফেলে ও রড দিয়ে আঘাত করে বাম কাধ, হাত, পা, হাটু ভেঙ্গে দেয়। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে দুস্কুতিকারীরা যাওয়ার সময় ইব্রাহিম রাজুথর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ইব্রাহিম রাজুথকে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তার বন্ধুদের সহযোগীতায় তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসা জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ বিষয়ে নিহত ভিকটিম ইব্রাহিম রাজুথর বাবা মাহি উদ্দিন বাদী হয়ে গত ১১ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ তারিখ চট্টগ্রামের জোড়ারগঞ্জ থানায় ১৬ জন নামীয় এবং ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে যার নং- ১১ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৪২৭/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
এই মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকেই উক্ত নির্মম ও নৃশংস হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত হত্যা কান্ডের মূল পরিকল্পণাকারী ও এজাহারনামীয় ১নং প্রধান আসামী মোঃ শাহীন হোসেন চট্টগ্রাম মহানগরের অলংকার মোড় এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ১০৩০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ শাহীন হোসেন শাহীন (৪০), পিতা-সুরুজ মিয়া, সাং-মধ্যম সোনাপাহাড়, থানা-জোড়ারগঞ্জ, জেলা-চট্টগ্রাম‘কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামী অকপটে স্বীকার যে, সে উপরে উল্লেখিত ইব্রাহিম রাজুথকে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলার মূল পরিকল্পণাকারী ও এজাহারনামীয় ১নং প্রধান পলাতক আসামী।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার জোড়ারগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।